মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বিয়ে। এর মাধ্যমে একজন নারী সম্পূর্ণ অপরিচিত একটা পরিবারকে আপন করে নেয়। এ জন্যই বলা নতুন জীবন শুরু করা বলতে বোঝায় বিবাহিত জীবনকে। সেক্ষেত্রে বৈবাহিক জীবনের শুরুটা কীভাবে হচ্ছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। বিখ্যাত ম্যারেজ কনসালটেন্ট অ্যানি পিয়ার্স এই বিষয়ে কয়েকটি সুন্দর কৌশল জানিয়েছেন। তার মতে, বিয়ের প্রথম সপ্তাহে কয়েকটি কাজ থেকে বিরত থাকলে পরবর্তিতে সমস্যা কম হবে।
স্বামী/স্ত্রীকে বাদ দিয়ে কোথাও বেড়াতে যাবেন না:
জরুরি কাজে কিংবা পেশাগত প্রয়োজনে বিয়ের পরেই শহরের বাইরে কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে চেষ্টা করুন নিজের স্বামী বা স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার। সদ্যবিবাহিত অবস্থায় স্বামী বা স্ত্রীর বিরহ যে-কারো অসহ্য বোধ হবে। সেই কষ্টটুকু তাকে না দিতে পারলেই ভালো। একান্তই যদি নিজের স্ত্রী বা স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে যেতে না পারেন, তাহলে চেষ্টা করুন অফিসিয়াল অ্যাসাইনমেন্টটিকে কিছুদিনের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার।
বাড়িতে কোনো অতিথিকে দীর্ঘদিনের জন্য আমন্ত্রণ দিবেন না :
বিয়ের পর প্রথম কয়েকটি দিন স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরকে চিনে নেয়ার সময়। এই সময়ে কোনো তৃতীয় ব্যক্তি প্রবেশ করে তাদের নিভৃতিটুকু ছিনিয়ে না নিলেই ভালো। বিয়ের পর বাড়িতে অতিথি আসতেই পারেন, কিন্তু ঘণ্টা দুই-তিন থেকে চলে যাওয়াই বাঞ্ছনীয়। পরিবর্তে তিনি যদি দীর্ঘ সময় নবদম্পতির সঙ্গে থাকেন, রাত্রেও বাড়িতে থেকে যান, তাহলে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরকে চিনে নেয়ার প্রক্রিয়ায় ছন্দপতন ঘটবে। কাজেই বিয়ের পর প্রথম সপ্তাহে কোনো অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর ব্যাপারে একটু ভাবুন।
বিয়ের অনুষ্ঠানে কী ঘটেছে তা নিয়ে ঝগড়া করবেন না :
মনে রাখবেন, বিয়ের অনুষ্ঠান অতীত হয়ে গেছে। কাজেই সেই অনুষ্ঠানে কেন আপনার স্ত্রী লাল শাড়ির বদলে গোলাপি শাড়ি পরলেন কিংবা কেন তিনি আপনার আত্মীয়ের সঙ্গে একটু কম হেসে কথা বললেন- এই জাতীয় বিষয় নিয়ে অনুগ্রহ করে বিয়ের পর ঝগড়া করবেন না। এতে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে, যা পরবর্তীতে ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বাড়ির আসবাবপত্রে কোনো পরিবর্তন আনবেন না :
বিয়ের পরে যিনি আপনার স্ত্রী হয়ে আপনার বাড়িতে আসছেন, তাকে এমনিতেই অজস্র অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে হচ্ছে। এই অ্যাডজাস্টমেন্টের ক্ষেত্রে প্রধান সহায়ক হতে পারেন অবশ্যই আপনি নিজে। এই অবস্থায় যদি বাড়ির আসবাবপত্র পাল্টানো কিংবা বাড়িটিকে রেনোভেট করার মতো কাজকর্ম শুরু করেন, তাহলে আপনি নিজেই নিজের বাড়িতে অস্বচ্ছন্দ বোধ করবেন। সেক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর পক্ষে আপনার বাড়িতে মানিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে।
অল্পতেই হাল ছেড়ে দেবেন না :
বিয়ের পরে-পরেই ছোটখাটো বিষয়ে মনোমালিন্য বা অশান্তি হতেই পারে। কিন্তু তা থেকেই যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে, আপনার স্বামী বা স্ত্রী একেবারেই আপনার উপযুক্ত নন কিংবা বিয়ে করে আপনি একেবারে ঠকে গেছেন তাহলে ভুল করবেন। সুখী দাম্পত্য জীবন অর্জন করতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হয়, আত্মত্যাগ করতে হয়, সর্বোপরি ধৈর্যশীল হতে হয়। কাজেই অল্পেই হাল ছেড়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন না। ধৈর্য রেখে চললে জীবনে সুখ আসবেই।
হানিমুনে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হবেন না :
অনেক দম্পতিই বিয়ে সেরেই হানিমুনে দৌড়ান। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নববিবাহিতদের পারস্পরিক অ্যা়ডজাস্টমেন্টের সবচেয়ে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে নিজেদের বাড়িতেই। নিজের বাড়ির স্বাচ্ছন্দ্যেই পরস্পরকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে চিনে নেয়ার কাজটা সহজ হয়। কাজেই বিয়ের প্রথম সপ্তাহ নিজের বাড়িতেই কাটান। হানিমুনের অঢেল সময় তারপরেও পাবেন।